ফেসবুক পেজ জনপ্রিয় করার ১০টি টিপস

মাথায় নতুন কোনও আইডিয়া আসলেই সবার আগে চাই একটা ফেসবুক পেজ। পেজ খোলা তো মিনিট দুয়েকের কাজ। এরপর ফেসবুক পেজ জনপ্রিয় করবেন কী করে? হুড়মুড় করে সবাই লাইক বা ফলো করবে না নিশ্চয়ই। পেজে লাইক বাড়াতে থাকা চাই ধৈর্য, জানা চাই বিশেষ কিছু টিপস।

প্রোফাইল গুছিয়ে নিন, ফেসবুক পেজের জন্য অন্যরকম একটা নাম থাকলে নিজেকে আলাদা করতে পারবেন ঠিকই, তবে ব্যবহারকারীরা পেজটাকে সহজে খুঁজে পাবে না। মাথায় রাখতে হবে মানুষের খোঁজার অভ্যাস। অর্থাৎ মানুষ গুগল বা ফেসবুকে কী লিখে সার্চ করছে সেটা মাথায় রেখে পেজের নাম ও ইউআরএল ঠিক করুন। এক্ষেত্রে পরিচিত ব্র্যান্ড হলে সে নামেই পেজ খোলা যায়। আর যদি ব্র্যান্ডের চিন্তা মাথায় না থাকে, তবে পেজের নাম বা ইউআরএল যতটা সম্ভব সাধাসিধে রাখুন।

অনেকে আবার কোনোরকম পেজ খুলেই লাইক বাড়াতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ডেসক্রিপশন, স্লোগান, ঠিকানা, খোলা থাকার সময়, ওয়েবসাইট, ফোন নম্বর, লোকেশন এসব ঠিকঠাক না করলে সেই পেজের প্রচার করবে না ফেসবুক। তাই সময় নিয়ে এসব তথ্য পূরণ করুন। নিজের মতো করে একটি এনিমেটেড বা ভিডিও কাভার যোগ করতে পারলে বেশ ভালো। কোনও ছবি আপলোড করলে সেটার একটা সুন্দর বর্ণনা লিখতে ভুলবেন না। পেজের সবচেয়ে আকর্ষণীয় পোস্টটাকে ‘পিন’ করে রাখুন।

লাইক-কমেন্ট করুন,নিজের পেজে অন্যের লাইক কমেন্টের আশায় হা করে বসে না থেকে পেজের প্রোফাইল থেকে অন্যের পেজের ভালো পোস্টগুলোতে লাইক ও গঠনমূলক কমেন্ট করুন। শুধু শুধু নিজের পেজের নামটা দেখানোর জন্য এক শব্দে বা এলোমেলো কিছু লিখতে যাবেন না। এতে আপনার পেজের প্রতি কারও আগ্রহ থাকবে না। পেজের অর্গানিক গ্রোথ বাড়াতে শুরুতে আপনার পেজটি যেন ‘সবার বন্ধু’ হিসেবেই থাকে।

বিজনেস সংক্রান্ত পেজ হলে অবশ্যই ওপরের দিকের বারে উপযুক্ত বাটন রাখবেন। কারও ক্ষেত্রে সেটা হতে পারে সেন্ড মেসেজ, কারও বেলায় সাইন-আপ। আবার পেজের ‘শপ’ সেকশনে যখন যথেষ্ট আইটেম থাকবে তখন ‘শপ নাও’ বাটনও যোগ করতে পারেন। এক্ষেত্রে সেন্ড মেসেজ বা কল বাটনের ব্যবহারই বেশি বলা যায়।

যোগ করুন গ্রুপ

পেজের ফ্যান-ফলোয়ার বাড়তে শুরু করলে তাদের সবাইকে এক ছাদের তলায় নিয়ে আসার চেষ্টা করুন। তাদের মতামত বা পোস্ট শেয়ার করার জন্য আলাদা করে একটা গ্রুপ বানিয়ে নিতে পারেন। ওই গ্রুপের কারণেও বাড়তে পারে অর্গানিক লাইক।

লাইভ

সাধারণ ভিডিও বা পোস্টের চেয়ে ১০ গুণ বেশি রিচ পাওয়া যাচ্ছে ফেসবুক লাইভ ভিডিওতে। তাই পেজের সঙ্গে মানানসই কোনও আইডিয়া পেলে সেটার লাইভ করার চেষ্টা করুন। ফেসবুক এখনও লাইভ ভিডিওগুলোকে তাদের নিউজ ফিডে সবার ওপরে রাখার চেষ্টা করে। এক্ষেত্রে কোনও পণ্য বা সেবার ডেমো কিংবা মজার কোনও টিউটোরিয়াল দেখাতে পারেন।

পোস্টের মাপ

একটি আদর্শ অর্গানিক ফেসবুক পোস্টের দৈর্ঘ্য হলো ৪০-৮০টি অক্ষর (ইংরেজিতে, স্পেসসহ)। অল্প কথায় বেশি তথ্য দিতে পারলেই সেটার ‘রিচ’ বাড়িয়ে দেয় ফেসবুক।

ভুল তথ্য নয়

পেজের এনগেজমেন্ট বাড়াতে উল্টোপাল্টা খবর বা ভুল কিছু পোস্ট করতে যাবেন না। ভুয়া তথ্য নিয়ে ফেসবুক এখন বেশ সরব। ভুল তথ্যের ‘রিপোর্ট’ পেলে দেখা যাবে আপনার পেজটা চলে যাবে লাল তালিকায়।

সময়জ্ঞান

আপনার গ্রাহক বা পেজের অনুসারীদের অভ্যাস বা রুটিন বুঝে নিন। সেই অনুযায়ী বেছে নিতে হবে পোস্ট করার সময়। একেক ধরনের পেজে ব্যবহারকারীদের এংগেজমেন্টের সময়টাও একেক রকম। যেমন খাবার ডেলিভারি সংক্রান্ত পেজ হলে সকাল বা বিকালের সময় পোস্ট করুন, মধ্যরাতে নয়।

ইনস্ট্যান্ট রিপ্লাই

আপনার বিজনেস পেজে ইনবক্স করা মাত্রই যেন ক্রেতারা কোনও না কোনও তথ্য পায়, সে জন্য অটোমেটিক রিপ্লাইয়ের ব্যবস্থা রাখুন। পেজের সেটিংস-এ গিয়ে বামপাশের মেসেজিং অপশনে যান। এরপর রেসপন্স অ্যাসিসট্যান্ট সিলেক্ট করে ‘সেন্ড ইনস্ট্যান্ট রিপ্লাইস’ সিলেক্ট করুন। চেঞ্জ-এ ক্লিক করে নিজের মতো করে বার্তাটি লিখুন। আপনার ক্রেতা বা গ্রাহক যদি শুধু এ দেশীয় হয়, তবে অভ্যর্থনার বার্তা বাংলাতেই লিখুন। সবশেষে ‘সেভ’ করুন।

ফেসবুক পিক্সেল

আপনার যদি আলাদা ওয়েবসাইট থাকে তবে সেই সাইটের ফেসবুক পেজের জন্য ‘ফেসবুক পিক্সেল’ অপশনটি ব্যবহার করুন। এর জন্য কিছুটা আইটি জ্ঞান থাকা চাই। পিক্সেল বলতে এখানে একটি ছোট কোডকে বোঝানো হচ্ছে যা আপনার ওয়েবসাইটে থাকবে। ওই কোডের মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইট ভিজিট করা গ্রাহকদের তথ্য পাবে ফেসবুক। সেই অনুযায়ী ঠিক করতে পারবেন ‘টার্গেট অডিয়েন্স’। অর্থাৎ যারা আপনার ওয়েবসাইটে মাঝে মধ্যে ঢুঁ মারে তারাই আপনার ফেসবুকের পোস্ট যেন বেশি বেশি দেখতে পায়, সেটার বন্দোবস্ত করে ফেসবুক পিক্সেল।

সম্পর্কিত নিউজ

আরও পড়ুন