বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, তাদের দল কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করার কথা বলার নীতিতে বিশ্বাসী নয়। বুধবার (২০ নভেম্বর) ফেনীর ফুলগাজীর শ্রীপুরে ইস্কান্দার মজুমদার বাড়ি প্রাঙ্গণে এক সভায় এ কথা বলেন তিনি।
“আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার অধিকার জনগণের বিষয়”
মির্জা ফখরুল বলেন, “আওয়ামী লীগ একটি রাজনৈতিক দল। তারা রাজনীতি করবে কি না, নির্বাচন করবে কি না, তা জনগণই ঠিক করবে। কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করার কথা বিএনপি বলতে পারে না।”
তিনি আরো বলেন, যারা অপরাধ করেছে, তাদের বিচার ও শাস্তি হওয়া উচিত। তিনি বলেন, “যারা দেশের মানুষ হত্যা করেছে, নির্যাতন করেছে এবং যারা দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করেছে, তাদের আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে এবং শাস্তি দিতে হবে।”
“১৫ বছরের জঞ্জাল সাফ করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার আহ্বান”
বিএনপির মহাসচিব অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “১৫ বছরের পুরনো জঞ্জাল সাফ করতে হবে। একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অন্তবর্তীকালীন সরকারের উদ্যোগ প্রয়োজন। জনতার আন্দোলন ও গণ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে। তারা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে।”
তিনি জানান, বর্তমানে অন্তবর্তীকালীন সরকার তিন মাসের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো করছে এবং যত দ্রুত সম্ভব একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আয়োজন করবে।
গণমাধ্যমের বক্তব্য ভুল উপস্থাপনের অভিযোগ
মির্জা ফখরুল গণমাধ্যমে বিষয়বস্তুর ভুল উপস্থাপনের অভিযোগ তুলে বলেন, “আমরা কাউকে নির্বাচনে আনতে চাই, এমনটা বলিনি। গণমাধ্যম বিষয়টি সঠিকভাবে প্রকাশ করেনি।”
বেগম খালেদা জিয়ার দুর্বিষহ বন্দিজীবনের অভিযোগ
বিএনপির মহাসচিব অভিযোগ করেন, মিথ্যা মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে ছয় বছর কারাগারে থাকতে হয়েছে। তিনি বলেন, “স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে রাখা এবং পুরনো খাবার খাওয়ানোর ফলে খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন।”
অপরাধীদের বিচার নিশ্চিতের আহ্বান
সভায় তিনি জোর দিয়ে বলেন, দেশের গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় অপরাধীদের কঠোর শাস্তি এবং জবাবদিহিতার ব্যবস্থা করতে হবে। এজন্য জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
মির্জা ফখরুলের এই বক্তব্য আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে চলমান রাজনৈতিক বিতর্ককে নতুন করে উষ্ণতা দিয়েছে। সভায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে পরবর্তী আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেন তিনি।