মার্কিন রেটিং এজেন্সি মুডিস বাংলাদেশের ঋণমান কমিয়ে ‘বি-২’তে নামিয়েছে। সোমবার (১৮ নভেম্বর) প্রকাশিত তাদের নতুন রেটিংয়ে এ পূর্বাভাস দেওয়া হয়, যা দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
মুডিসের বিশ্লেষণ:
মুডিস তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতার মধ্যে সরকার পরিবর্তনের কারণে দেশের রাজনৈতিক ঝুঁকি বেড়েছে। একইসঙ্গে নিম্ন প্রবৃদ্ধি, সরকারের তারল্যের ঝুঁকি এবং ব্যাংকিং খাতের দুর্বলতাও আর্থিক অবস্থাকে আরও সংকটময় করেছে।
সংস্থাটির মতে, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং দুর্বল প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশের অর্থনীতিকে স্বল্পমেয়াদি অভ্যন্তরীণ ঋণের ওপর নির্ভরশীল করে তুলেছে। এর ফলে তারল্য ঝুঁকিও ক্রমবর্ধমান।
অর্থনৈতিক প্রভাব:
মুডিস জানিয়েছে, রেমিট্যান্স প্রবাহ এবং উন্নয়ন অংশীদারদের কাছ থেকে পাওয়া ঋণের প্রবাহ বাড়লেও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের স্থিতিশীলতা কমে যাওয়ায় বহির্বিশ্বের অর্থনৈতিক চাপে দেশের ঝুঁকি বেড়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির পাশাপাশি নির্বাচনী রোডম্যাপের অভাবে সাম্প্রতিক অস্থিরতা চাহিদা-সরবরাহ চেইনে ব্যাঘাত সৃষ্টি করছে। এর ফলে দেশের তৈরি পোশাক খাতে সম্ভাবনা কমেছে এবং রপ্তানি খাতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ:
মুডিস বলছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা কার্যকর করা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, উচ্চ বেকারত্ব মোকাবিলা এবং দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থ হলে সংস্কার এজেন্ডা বাস্তবায়নে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পারে।
মুডিসের নতুন রেটিং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতার বহিঃপ্রকাশ। সংকট মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে দেশের দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঝুঁকির মুখে পড়বে বলে সতর্ক করেছে সংস্থাটি।