২০১২ সালের পর প্রথমবারের মতো বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে সেনাকুঞ্জের বিশেষ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকালে তিনি ক্যান্টনমেন্টে যান। দীর্ঘদিন পর এমন একটি অনুষ্ঠানে তার অংশগ্রহণ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা শুরু হয়েছে।
সেনাকুঞ্জে উপস্থিতি
বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে খালেদা জিয়া গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’ থেকে রওনা দেন। তার সঙ্গে ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের সিনিয়র নেতারা। তিনি হালকা বেগুনি রঙের শাড়ি পরে সেনাকুঞ্জে যান। প্রয়াত সন্তান আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলী আহমেদসহ আরও কয়েকজন নেতাও তার সঙ্গে ছিলেন। সেখানে পৌঁছানোর পর খালেদা জিয়া হুইল চেয়ারে বসে অতিথিদের আসনে গিয়ে জায়গা নেন।
উপদেষ্টাদের সঙ্গে কুশল বিনিময়
অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে খালেদা জিয়া বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। তার সঙ্গে কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ অন্তর্বর্তী সরকারের তরুণ দায়িত্বশীলরা। উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদসহ আরও অনেকে তার শারীরিক অবস্থার খবর নেন।
মাহফুজ আলম তাকে জিজ্ঞেস করেন, ‘ম্যাডাম, আপনার শরীর কেমন?’
উত্তরে খালেদা জিয়া বলেন, ‘না, বেশি ভালো না।’
তখন মাহফুজ আলম বলেন, ‘আপনাকে ভালো থাকতে হবে। সামনে আসলে একটা কনফিডেন্স বের হয়।’
গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতি
অনুষ্ঠানে এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, গণফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ড. কামাল হোসেনসহ আরও অনেক রাজনৈতিক নেতা উপস্থিত ছিলেন। ববি হাজ্জাজ জানান, খালেদা জিয়া তাকে জিজ্ঞেস করেছেন, ‘কেমন আছো?’ তিনি বলেন, ‘উনি অল্প অল্প করে কথা বলছিলেন এবং সুন্দর করে হাসছিলেন।’
রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রতিক্রিয়া
অনুষ্ঠানে যোগদানের প্রসঙ্গে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এখানে এসেছেন। একযুগ তিনি আসার সুযোগ পাননি। আমরা গর্বিত এই সুযোগ দিতে পেরে।’
অনুষ্ঠানে ২৪-এর অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী ছাত্রনেতা সারজিস আলম, উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এবং আসিফ নজরুলের উপস্থিতি উল্লেখযোগ্য ছিল। তারা খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময়ের মুহূর্তগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেন।
প্রকাশ্যে খালেদা জিয়ার উপস্থিতি
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের একটি মামলায় কারাগারে যাওয়ার পর এটি ছিল খালেদা জিয়ার প্রথম প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ। তার আগেরবার তিনি ২০১২ সালে সশস্ত্র বাহিনী দিবসে অংশ নেন।
খালেদা জিয়ার দীর্ঘদিন পর সেনাকুঞ্জে অংশগ্রহণ রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার সূচনা করেছে। তার শারীরিক অবস্থা ও রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়েও নানা জল্পনা চলছে।