পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সেন্টমার্টিনে পর্যটন নিয়ন্ত্রণে নতুন যৌথ কমিটি গঠন করেছে। সেন্টমার্টিনে ভ্রমণ করা পর্যটকদের নিবন্ধনসহ একাধিক বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব সাবরীনা রহমান স্বাক্ষরিত এক আদেশে কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো।
কমিটির দায়িত্ব ও কার্যপরিধি
প্রকাশিত আদেশের মাধ্যমে জানানো হয়েছে যে, পর্যটকদের সেন্টমার্টিনে ভ্রমণের আগে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের তৈরি করা অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করে ট্রাভেল পাস নিতে হবে। এই ট্রাভেল পাস ছাড়া জাহাজে ভ্রমণ অনুমোদিত হবে না।
কমিটি পর্যটকদের জন্য পরিবেশবান্ধব ভ্রমণ নিশ্চিত করবে। এতে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে পলিথিন ব্যাগ ও একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের পণ্য। এসব বিষয় কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে কমিটি।
পর্যটকদের হোটেল বুকিং ও নিবন্ধন
পর্যটকরা দ্বীপে পৌঁছানোর পর কোন হোটেলে থাকবেন, তা সুনির্দিষ্টভাবে রেজিস্টারে সংরক্ষণ করতে হবে। এছাড়া জাহাজ ছাড়ার স্থান ও সেন্টমার্টিনের প্রবেশপথে পর্যটকদের করণীয় ও বর্জনীয় বিষয়গুলো স্পষ্ট করার জন্য বিলবোর্ড স্থাপন করতে বলা হয়েছে।
কাজের সমন্বয় ও সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি
পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার কার্যালয় সার্বিক বিষয় ও যোগাযোগ সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করবে। প্রয়োজনে কমিটি সদস্য সংখ্যা বাড়াতে পারবে।
কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন কক্সবাজার সদর ও টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। কমিটির সদস্যসচিব থাকবেন পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার কার্যালয়ের উপপরিচালক। সদস্য হিসেবে থাকবেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড এবং ট্যুরিস্ট পুলিশের প্রতিনিধি।
বিধিনিষেধ আরোপ ও প্রয়োগ
পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের এক সভায় গত ২২ অক্টোবর সেন্টমার্টিন নিয়ে বিধিনিষেধ আরোপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে ২৮ অক্টোবর এক পরিপত্রে সেগুলো কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
নভেম্বর মাসে দ্বীপে যাওয়া পর্যটকদের দিনেই ফিরে আসতে হবে। রাতযাপন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তবে ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে প্রতিদিন গড়ে দুই হাজারের বেশি পর্যটক থাকতে পারবেন না। এছাড়া, দ্বীপে রাতের বেলায় আলোকসজ্জা, শব্দদূষণ সৃষ্টি, কিংবা বারবিকিউ পার্টি আয়োজন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
নৌযান চলাচলে অনুমতি
সেন্টমার্টিনে যেকোনো নৌযান বা জাহাজ চলাচলে পরিবেশ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের অনুমতি আবশ্যক। এরপর কক্সবাজারের জেলা প্রশাসকের অনুমোদন সাপেক্ষে নৌযান চলাচল করতে পারবে।