সায়েন্সল্যাব এলাকায় সংঘর্ষের পর সিটি কলেজকে বর্তমান অবস্থান থেকে স্থানান্তরের দাবি জানিয়েছেন ঢাকা কলেজের শিক্ষকরা। বুধবার (২০ নভেম্বর) সংঘর্ষের দিন শেষ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যের মাধ্যমে এই দাবি জানান তারা।
ঢাকা কলেজ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আ ক ম রফিকুল ইসলাম লিখিত বক্তব্যে বলেন, “আমাদের ১৮৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন শেষে শিক্ষার্থীরা যখন কলেজ বাসে সায়েন্সল্যাব মোড়ে যাচ্ছিল, তখন সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে সন্ত্রাসী হামলা চালায়। তারা ছুরি ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করেছে। টিভি ফুটেজ দেখে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দায়ীদের আইনের আওতায় আনা হোক।”
ঢাকা কলেজ শিক্ষকদের দাবি
সংঘর্ষের ঘটনায় সিটি কলেজ শিক্ষার্থীদের আওয়ামী লীগের দোসর হিসেবে আখ্যা দিয়ে তারা ৮টি দাবি উত্থাপন করেছেন।
- সিটি কলেজকে অন্যত্র স্থানান্তর করতে হবে।
- টিভি ফুটেজ দেখে হামলাকারী সিটি কলেজ শিক্ষার্থীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করতে হবে।
- আহত শিক্ষার্থীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে।
- আহত শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ব্যবস্থা করতে হবে।
- সেনাবাহিনীর হামলার জন্য দায়ী কর্মকর্তাদের শাস্তি দিতে হবে।
- দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তাদের পদত্যাগ নিশ্চিত করতে হবে।
- সিটি কলেজের যেসব শিক্ষক এ ঘটনায় জড়িত, তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
- স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে সরাসরি ঢাকা কলেজ পরিদর্শন করতে হবে।
সংঘর্ষের পটভূমি ও হতাহত
বুধবার দিনভর চলা সংঘর্ষে সায়েন্সল্যাব এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এতে দুই কলেজের অন্তত ৩৬ জন শিক্ষার্থী আহত হন। তবে ঢাকা কলেজের শিক্ষকদের দাবি, দেড়শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন, এমনকি শিক্ষকরাও হামলার শিকার হয়েছেন।
সংঘর্ষের দায় কার?
ঢাকা কলেজ শিক্ষকদের দাবি, সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা পূর্বের বিভিন্ন সংঘর্ষে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে। ফলে সংঘর্ষ এড়াতে সিটি কলেজকে স্থানান্তর করা জরুরি।
সরকার ও প্রশাসনের প্রতি ক্ষোভ
ঢাকা কলেজ শিক্ষকরা আরও অভিযোগ করেছেন, তাদের স্থাপনায় সেনাবাহিনী সরাসরি হামলা চালিয়েছে, যা লজ্জাজনক। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন তারা।
তারা আরও বলেন, “এই পরিকল্পিত হামলার মাধ্যমে বর্তমান সরকারের শিক্ষা কার্যক্রমকে ব্যর্থ করার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। সিটি কলেজ ও পুলিশ সরাসরি এতে জড়িত ছিল।”
শিক্ষা পরিবেশ পুনরুদ্ধারের আহ্বান
ঢাকা কলেজের শিক্ষকরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের দাবি মেনে নিয়ে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানান। অন্যথায়, বড় ধরনের কর্মসূচি নেওয়া হবে বলে সতর্ক করেন তারা।