আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে জণগণের প্রত্যাশা পূরণ হয়নিঃ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা 

দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ৫ অগাস্টের পর থেকে অনেকটাই উন্নতি হয়েছে, তবে জনগণের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী তা এখনো সন্তোষজনক পর্যায়ে পৌঁছায়নি বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

মঙ্গলবার চট্টগ্রাম নগর পুলিশের সদর দপ্তরের সম্মেলন কক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নজরদারিতে রাখার নির্দেশ

সভায় জামিন পাওয়া শীর্ষ সন্ত্রাসীদের কঠোর নজরদারিতে রাখার নির্দেশ দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “আদালত থেকে রায় পেয়ে অনেক শীর্ষ সন্ত্রাসী জামিন পেয়েছে। এসব অপরাধী পুনরায় অপরাধে জড়িত হলে তাদের সঙ্গে সঙ্গে গ্রেপ্তার করতে হবে এবং নজরদারি জোরদার করতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “৫ অগাস্টের পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে হয়তো সেটা জনগণের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী সন্তোষজনক পর্যায়ে পৌঁছেনি। এ লক্ষ্যে আরো উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।”

সাইবার অপরাধ রোধে তৎপরতা

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচারের মাধ্যমে সাইবার অপরাধ বৃদ্ধির বিষয়টিও উল্লেখ করেন তিনি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের এ বিষয়ে সতর্ক থাকার পাশাপাশি অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দেন।

জনবান্ধব পুলিশিং নিশ্চিত করার তাগিদ

থানাগুলোকে জনগণের আস্থার জায়গায় পরিণত করার ওপর জোর দিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “থানায় সাধারণ জনগণের সাথে ভালো ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। জনগণ যেন নির্বিঘ্নে যেকোনো সমস্যায় থানায় গিয়ে উপযুক্ত সেবা পায়।”

তিনি আরও জানান, থানার কার্যক্রমকে আরও সক্রিয় ও যুগোপযোগী করতে হবে এবং একটি জনবান্ধব পুলিশিং ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।

যানজট নিরসনে উদ্যোগ

নগরীর যানজট সমস্যা সমাধানে কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করার আহ্বান জানান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “ইতোমধ্যে ডিএমপি এলাকায় ৭০০ শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি অবসরপ্রাপ্ত সেনাবাহিনী, পুলিশ এবং বিজিবির সদস্যদের ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে কাজে লাগানোর চিন্তাভাবনাও চলছে।”

তিনি আরও প্রস্তাব করেন, প্রতিটি মহানগরীতে সভা-সমাবেশের জন্য নির্দিষ্ট মুক্তাঙ্গন নির্ধারণ করতে হবে। “ঢাকায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে সভা-সমাবেশের জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছে। একইভাবে চট্টগ্রামসহ অন্যান্য মহানগরীতে এমন জায়গা নির্ধারণ করা প্রয়োজন যাতে যানজট কমে।”

প্রোটোকল ডিউটি কমানোর নির্দেশ

পুলিশের প্রোটোকল ডিউটি কমিয়ে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের ওপর জোর দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।

উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের উপস্থিতি

সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম, র‌্যাবের মহাপরিচালক একেএম শহীদুর রহমানসহ বিভিন্ন বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।

সভায় সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ, র‌্যাব, কোস্টগার্ড, আনসার ও ভিডিপি, পাসপোর্ট অধিদপ্তর, কারা অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তারা অংশ নেন।

 

সম্পর্কিত নিউজ

আরও পড়ুন