ছাত্র প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে নীতিনির্ধারণে গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিতের দাবি

ছাত্র প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে নীতিনির্ধারণে গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিতের দাবি

সমাজের সার্বিক বিষয়ে নীতিনির্ধারণ এবং উপদেষ্টা পরিষদে অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণে বশির-ফারুকীকে অপসারণসহ আট দফা দাবি জানিয়েছে সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বুধবার (১৩ নভেম্বর) তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এই দাবি জানানো হয়। এতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

সম্মেলনে বক্তারা বলেছেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক অধিকার সুরক্ষায় সরকারকে আরও কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। ছাত্ররা সমাজের ভবিষ্যৎ নীতিনির্ধারক, তাদের অবহেলিত রেখে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া কখনোই সঠিক হবে না বলে উল্লেখ করেন নেতৃবৃন্দ।

ছাত্র প্রতিনিধিদের উত্থাপিত ৮ দফা দাবিঃ

১. বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতদের পুনর্বাসন ও চিকিৎসা ব্যবস্থা:
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত/নিহতদের দ্রুত পুনর্বাসন এবং আহতদের যথাযথ চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়। তারা অভিযোগ করেন, জুলাই বিপ্লবের সময় আহতদের চিকিৎসা প্রদানে হাসপাতালে অব্যবস্থাপনা দেখা গেছে, যা শিগগিরই সমাধান করা উচিত।

২. দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ছাত্র অংশগ্রহণে পেট্রোল টিম গঠন:
দেশজুড়ে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ চরম বিপাকে পড়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রণ এবং সিন্ডিকেট প্রথা বিলুপ্তিতে ছাত্র প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে দ্রুত একটি পেট্রোল টিম গঠনের প্রস্তাব করা হয়।

৩. উপদেষ্টা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিত্ব:
উপদেষ্টা পরিষদে নিয়োগের ক্ষেত্রে পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মাদ্রাসা, সাত কলেজ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে একটি কমিটি গঠনের দাবি জানানো হয়। এতে সবপক্ষের সম্মিলিত মতামতের ভিত্তিতে উপদেষ্টা নিয়োগের আহ্বান জানানো হয়েছে।

৪. গণহত্যার বিচার কার্যক্রমে ছাত্র প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ:
গণহত্যার বিচারে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম এবং সোশাল মিডিয়ায় প্রকাশিত তথ্য যাচাই বাছাই করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ছাত্র প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের প্রস্তাব করা হয়।

৫. সংবিধানের পুনর্লিখন ও সংস্কার:
প্রতিনিধিরা জানান, বর্তমান সংবিধান পুনর্লিখন এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার করার সময় এসেছে।

৬. প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ্যাট প্রত্যাহার:
প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৫ শতাংশ ভ্যাট শিক্ষার্থীদের ওপর অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি করেছে। শিক্ষার্থীদের দাবি, এ ভ্যাট সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার করা হোক।

৭. উপদেষ্টা পরিষদে মুক্তিযুদ্ধের অবদানের জন্য পরিচিত ব্যক্তিত্বদের নিয়োগ:
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে অবদান রাখা ব্যক্তিত্ব এবং একজন কৃষিবিদ বিজ্ঞানীকে উপদেষ্টা পরিষদে অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

৮. সংস্কার কার্যক্রমে জনমতের গুরুত্ব ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত:
জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণে সংস্কার কমিশনের কার্যক্রমে জনমতের ভিত্তিতে সংস্কার পরিচালনার দাবি জানানো হয়েছে।

৯. জনপ্রতিনিধি বিহীন সময়ে সামাজিক নিরাপত্তা ও গ্রাম্য বিচার ব্যবস্থা সক্রিয় রাখা:
বক্তারা জানান, এই সময়ে সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুরক্ষিত করতে এবং গ্রামীণ বিচারিক আদালত পরিচালনা করার জন্য শক্তিশালী স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম বাড়ানো দরকার।

বক্তারা আরো বলেন, গণতান্ত্রিক অধিকারের প্রশ্নে শিক্ষার্থীদের পাশে থাকা জরুরি, যাতে তারা দেশের ভবিষ্যৎ সিদ্ধান্ত গ্রহণে ভূমিকা রাখতে পারে।

 

সম্পর্কিত নিউজ

আরও পড়ুন