বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিল্পপতি ভারতের রতন টাটা। তাঁর বর্ণাঢ্য জীবনের ইতি ঘটল ৮৬–তে এসে। ভারতের এই সফল ব্যবসায়ী সোমবার অসুস্থ হয়ে ভর্তি হন মুম্বাইয়ের ক্যান্ডি হাসপাতলে। সেখানেই মারা গেলেন বুধবার রাতে ।
ভারতের অন্যতম বড় ব্র্যান্ড টাটা গ্রুপ। ১৫৬ বছরের পুরোনো টাটা গ্রুপ ভারতের ব্র্যান্ডিংয়েও অনন্য। আর এই ব্র্যান্ডিংয়ের পেছনে বড় অবদান রতন টাটার। তাঁর সময়ে গ্রুপটির আয় বেড়েছিল ৪০ গুণ।
রতন টাটা ১৯৯০ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত টাটা গ্রুপের চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০১৬-১৭ সালের দিকে কিছুদিন টাটা গ্রুপের অন্তর্বর্তী চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি টাটা ট্রাস্টের দায়িত্বপালন করেছেন।
রতন টাটার বাবা নাভাল টাটা পরিবারে এসেছিলেন দত্তক সন্তান হিসেবে। নাভালের প্রথম স্ত্রী সোনির ঘরে জন্ম হয় রতন টাটার। রতন টাটার বয়স যখন ১০ বছর, তখন মা–বাবার ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়।
এর পর থেকে রতন টাটা ও তাঁর ছোট ভাই জিমি টাটা বড় হন তাঁর দাদির কাছে। এই সময়ের কথা খুব একটা প্রকাশ্যে বলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতেন না।
বাবা-মায়ের ছাড়াছাড়ি মেনে নিতে পারেননি ছোট্ট দুই ভাই। তাই ছোটবেলায় বেশ মানসিক কষ্ট নিয়েই বেড়ে ওঠেন দুই ভাই।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে গিয়ে এক মার্কিন তরুণীর প্রেমে পড়েন রতন টাটা। সেটা তাঁর পড়ার শেষ দিকের ঘটনা। সেই প্রেম পরিণতি পায়নি। ভারতে ফিরে আসেন রতন টাটা।
এরপর একাধিক সম্পর্কে জড়ালেও শেষ পর্যন্ত বিয়ের সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি রতন টাটা। তাই শেষ দিন পর্যন্ত কুমার থেকে গেলেন। অনেকে মনে করেন, ছোটবেলা বাবা-মায়ের বিচ্ছেদই রতন টাটার মধ্যে বিয়ের ভীতি তৈরি করেছে।
কুকুর খুব ভালোবাসতেন রতন টাটা। মুম্বাইতে টাটা গ্রুপের যে সদর দপ্তর রয়েছে, সেখানে কুকুরের জন্য একটি আলাদা ঘর আছে।
বিভিন্ন সময় রতন টাটাকে খেলতে দেখা যেত কুকুরদের সঙ্গে। রতন টাটার ইনস্টাগ্রামে তাঁর চেয়ে কুকুরের ছবির সংখ্যাই বেশি!
রতন টাটা ছিলেন লাইসেন্সধারী পাইলট। তিনি প্রথম ভারতীয় হিসেবে ২০০৭ সালে এফ-১৬ ফ্যালকন মডেলের ফাইটার জেট চালান।
দানের ব্যাপারে নামডাক আছে রতন টাটার। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৮ লাখ ২৯ হাজার ৭৩৪ কোটি রুপি দান করেছেন তিনি। কেবল মহামারিকালেই বিভিন্ন খাতে বিলিয়েছেন ১ হাজার ৫০০ কোটি রুপি।