মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসানকে নিয়ে মিথ্যা প্রচারণা ও মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার। পরিবারের পক্ষ থেকে এক লিখিত বিবৃতিতে জানানো হয়, দীর্ঘ ৩৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে সেনাবাহিনীতে দায়িত্ব পালন করেছেন জিয়াউল আহসান। তবে অবসর গ্রহণের পর তাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এবং গণমাধ্যমে অপপ্রচারের শিকার করা হচ্ছে।
সেনাবাহিনীতে উজ্জ্বল ক্যারিয়ার
জিয়াউল আহসান ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে যোগদান করেন এবং কঠোর প্রশিক্ষণ শেষে ১৯৯১ সালে কমিশন লাভ করেন। চাকরি জীবনে তিনি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন, যার মধ্যে প্যারা কমান্ডো অফিসার এবং প্রশিক্ষক হিসেবে তার বিশেষ দক্ষতার কথা উল্লেখযোগ্য। তিনি সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ পদক “সেনাবাহিনী পদক (এসবিপি)” এবং “বিশিষ্ট সেবা পদক (বিএসপি)” লাভ করেন।
পরিবার জানায়, তার পুরো চাকরিজীবনে তিনি কোনো শাস্তি বা অভিযোগের মুখোমুখি হননি। বরং তিনি সবসময় নীতিনিষ্ঠ ও দায়িত্বশীল ছিলেন। সেনাবাহিনীর সদস্য হিসেবে তার প্রতি জনগণের আস্থা ও সম্মান ছিল।
মিথ্যা প্রচারণা ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ
বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়, জিয়াউল আহসানের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি কুচক্রী মহল মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে। এসব প্রচারণায় এমন অভিযোগ আনা হয়েছে যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। পরিবারের দাবি, তিনি কখনোই অবৈধ কোনো কর্মকাণ্ডের সঙ্গে আপোস করেননি। তার বিরুদ্ধে যারা অপপ্রচার চালাচ্ছে, তাদের মধ্যে অনেকে সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত বা বহিষ্কৃত।
গ্রেফতার ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ
পরিবার জানায়, গত ৭ আগস্ট ২০২৪ তারিখে ঢাকা সেনানিবাসের সরকারি বাসা থেকে তাকে গোপন স্থানে আটক রাখা হয় এবং ১৬ আগস্ট খিলক্ষেত থানা পুলিশের মাধ্যমে গ্রেফতারের তথ্য প্রকাশ করা হয়। আটক রাখার এই পুরো প্রক্রিয়া মানবাধিকার লঙ্ঘন ও আইনের পরিপন্থী ছিল বলে দাবি করেছে পরিবার।
পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়, “এই আটকের সময় ও পরবর্তীতে মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হয়, যা তার পারিবারিক ও সামাজিক সম্মান ক্ষুণ্ণ করেছে। এমনকি মিথ্যা অভিযোগ তুলে তাকে নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করা হচ্ছে।”
সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি নষ্ট করার অপচেষ্টা
পরিবার আরও উল্লেখ করে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের অন্যতম গর্বিত ও সম্মানিত প্রতিষ্ঠান। তবে কিছু মহল পরিকল্পিতভাবে দক্ষ সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে, যা সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি নষ্ট করার একটি সুদূরপ্রসারী চক্রান্ত।
পরিবারের দাবি, মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানকে নিয়ে চলমান মিথ্যা প্রচারণা বন্ধ করা উচিত এবং তাকে ন্যায়বিচার দেওয়া উচিত। তারা জনগণকে বিভ্রান্ত না হতে এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচারে কান না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসান একজন দেশপ্রেমিক সেনা কর্মকর্তা হিসেবে দীর্ঘদিন দেশের সেবা করেছেন। তার বিরুদ্ধে এ ধরনের অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রের ঘটনায় পরিবারের সদস্যরা হতাশা প্রকাশ করেছেন এবং গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দায়িত্বশীল আচরণ বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।