গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২ জন শিক্ষার্থী হঠাৎ করে তাদের ভর্তি বাতিলের খবরে পড়েছেন গভীর দুশ্চিন্তা ও হতাশার মধ্যে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কারিগরি ত্রুটির কারণে এ সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। এ ঘটনা তদন্তে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কী ঘটেছে?
বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েও নিজেদের পছন্দের বিষয়ে অধ্যয়ন করার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন এই শিক্ষার্থীরা। ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের পর অনেকেই ২-৩ দিন ক্লাসও করেছেন। কিন্তু হঠাৎ ব্যক্তিগত একটি মোবাইল নম্বর থেকে তাদের জানানো হয়, তাদের ভর্তি বাতিল হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের হতাশা
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানান, ভর্তি সম্পন্ন হওয়ার পরও এ ধরনের সিদ্ধান্ত তাদের ভবিষ্যৎ ধ্বংসের পথে ঠেলে দিয়েছে। এক শিক্ষার্থী বলেন,
“বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বলা হয়েছিল ভর্তি কমপ্লিট। এখন বলা হচ্ছে ভর্তি বাতিল। আমাদের ভবিষ্যৎ এখন অন্ধকারে। আমরা যেখানে ভর্তি ছিলাম, সেখানেও বাতিল করে এখানে এসেছি। এখন আমাদের কী হবে?”
আরেকজন শিক্ষার্থী জানান,
“আমি আমার পছন্দের বিষয় ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট নিয়ে ভর্তি হয়েছিলাম। ক্লাসও শুরু করেছি। অথচ এখন ফোন করে জানানো হলো, আমার মাইগ্রেশন বাতিল হয়েছে। আমরা এখন কোথায় যাব?”
অভিভাবকদের দুশ্চিন্তা
অভিভাবকরাও সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে দারুণ উদ্বিগ্ন। তারা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ “টেকনিক্যাল সমস্যা”র কথা বলে শুধু ভর্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে কোনো বিকল্প সমাধান বা দায়ভার গ্রহণ করেনি।
এক অভিভাবক বলেন,
> “আমার মেয়ে দ্বিতীয়বারের জন্য পরীক্ষা দিয়ে এখানে ভর্তি হয়েছিল। আগের জায়গায় ভর্তি বাতিল করে এসেছে। এখন তার সামনে কোনো পথ নেই। ও আত্মহত্যার কথা বলছে। আমরা কী করব?”
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গণমাধ্যমে এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হয়নি। তবে তারা জানিয়েছেন, তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রশ্ন উঠছে সময় নিয়ে
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ভর্তির পর প্রায় এক মাস ধরে কর্তৃপক্ষ কিছু বলেনি। এরই মধ্যে তারা ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম সম্পন্ন করে ক্লাস শুরু করেছিলেন। এক মাস পরে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য আরও জটিলতা তৈরি করেছে।
ভর্তির এই বাতিলের সিদ্ধান্ত শুধু শিক্ষার্থীদের জন্য নয়, তাদের পরিবারের জন্যও বড় দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কর্তৃপক্ষের তদন্তের ভিত্তিতে সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করা হলেও, এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে অনেকের শিক্ষাজীবন চরম ক্ষতির মুখে পড়তে পারে।